🚩 শ্রীরাম ও পশ্চিমবঙ্গ 🚩

প্রথমে একটা প্রশ্ন দিয়ে শুরু করি,

পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে বেশি পুরুষ দেবতার নাম কি এবং নারী দেবতার নামই বা কি?

আপাতত উত্তর হচ্ছে পুরুষ দেবতা শিব এবং নারী দেবতা মনসা কিন্তু খুব তাড়াতাড়ি যেটা ইতিমধ্যেই হতে শুরু করে দিয়েছে আগামী 50 বছরে শ্রীরাম হতে চলেছেন পশ্চিমবাংলার সর্বাধিক পূজিত দেবতা।

মর্যাদা পুরুষোত্তম শ্রীরাম হিন্দুদের কাছে একাধারে ভগবান ও ভারতীয় জাতিসত্তার অনন্য প্রতীক।

রামের নামে সাম্প্রদায়িক বিভাজন নিয়ে যতই সেকু মাকু এবং তৃণমূলীরা প্রোপাগান্ডা শুরু করুক, রাম কিন্তু তীব্র বেগে রথ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করে দিয়েছেন।

এর শুরু বাম আমলে,বাম আমলে বাম না রাম - এইভাবে শিক্ষিত প্রগতিশীল এবং অশিক্ষিত ও অসভ্য-বর্বর বিবেচনা করা হতো।

তখন কেউ যদি বলতেন আমি হিন্দু,হিন্দু ধর্মের মাহাত্ম্য বর্ণনা করতেন,বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর অত্যাচারের কথা বর্ণনা করতেন,কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর অত্যাচারের কথা বর্ণনা করতেন,নিজের মত প্রকাশ করতেন তখন তাদেরকে আরএসএস বা বিজেপি বলে দেগে দেওয়া হতো যেটা এখনো চলে আসছে তৃণমূলী আমলেও।

যাইহোক এখন পশ্চিমবঙ্গে রাম নাম এবং রামনবমী পালিত হচ্ছে প্রবল উৎসাহে ।

কোন জোর জুলুম,কোন বাম নাম, কোন সংখ্যালঘু তোষণ, কোন চোখ রাঙ্গানি বা কোন বহিরাগত তকমা যে শ্রী রামকে আটকাতে পারবেনা তার শুভসূচনা শুরু হয়ে গিয়েছিল 2014 সাল থেকেই।

যার ফলস্বরূপ এখন বামেদের এবং শাসকদল তৃণমূলের অনেক নেতা মন্ত্রীকে রামনবমী পালন করতে দেখা যাচ্ছে, হনুমান জয়ন্তী পালন করতে দেখা যাচ্ছে,

শুধু তাই নয় রামনবমী ,হনুমান জয়ন্তীতে অস্ত্র হাতে পোজ নিয়ে ছবি তুলতেও দেখা যাচ্ছে।

হয়তো অদূর ভবিষ্যতে এদের রামযাত্রা, রামায়নী বৈঠকের আয়োজন করতে পারেন,কোনো মেলা খেলাতে রাম-সাহিত্য বিক্রির স্টল ও করতে দেখা যেতে পারে।

যাই হোক পশ্চিমবঙ্গে রামনবমী ও হনুমান জয়ন্তী পশ্চিমবঙ্গের এখন এক জনপ্রিয় উৎসবে পরিণত হয়েছে।

গৈরিক জাতীয়তাবাদী মানুষ তো বটেই তাছাড়াও লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ এবং আমজনতা হাজির হচ্ছেন এই রাম নবমীর শোভাযাত্রায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে। 

কোথাও শোভাযাত্রা,কোথাও শ্রী রামের মূর্তি পুজো, কোথাও অস্ত্রপূজন হচ্ছে,কোথাও সশস্ত্র মিছিল হচ্ছে,কোথাও বাইক মিছিল হচ্ছে।

শাসকের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে বহু মানুষ পথে নেমেছে,বহু জায়গায় পুলিশ বাধা দিয়েছে,কোথাও লাঠিচার্জ করে জনপ্লাবনের গতিরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে কিন্তু তাও হিন্দুরা দমে যায় নি,

ক্ষতস্থানে রুমাল বা কাপড় জড়িয়ে শোভাযাত্রায় এগিয়ে যেতে দেখা গিয়েছে।

যারা বলেন রাম বাঙালিদের নয়, উত্তরের দেবতা,হিন্দিভাষীদের দেবতা,তাদের বলছি - 

* বাল্মীকির পর হিন্দি ভাষার অনেক আগে শ্রীরামের উল্লেখ পাওয়া গেছে কবি কৃত্তিবাসের 'শ্রীরাম পাঁচালী'তে।

* রানী রাসমনির কুল দেবতা ছিলেন রঘুবীর।

* শ্রী রামকৃষ্ণ পরমহংসদেব সহ আরো অনেক বাঙালী মনীষীদের নামে স্বতঃপ্রণোদিতই এসেছে 'রাম' শব্দটি।

* পশ্চিমবঙ্গের লোক সংস্কৃতি, পট দেখানো, লোকগীতি, লোকনাট্য ইত্যাদিতে রামায়ণের নানান কাহিনী দেখা গিয়েছে।

তাও বাংলার তথাকথিত পন্ডিতেরা ও বুদ্ধিজীবীরা বাঙালীদের রামনাম ভোলানোর নোংরা খেলায় মেতেছিলো, বাংলার জনগণ তাদের ক্ষমা করবে না।

গত কয়েকবছর ধরে পশ্চিমবঙ্গের মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রামনবমী পালন করছেন কারণ,

তারা আবার বিবেকানন্দ,রবীন্দ্রনাথ,শ্যামাপ্রসাদ, শ্রী চৈতন্য, শ্রী রামকৃষ্ণের বাংলা ফিরে পেতে চান।

যে বাংলা ছিলো একাধারে শক্তির উপাসক ও প্রেমের পূজারী।

শক্তি ও প্রেমের সমন্বয় সাধনই বাঙালীদের এখন একমাত্র কাজ।

বাঙালীর শেকড়ে ফেরার রাস্তায় সহায় আছেন শ্রীরাম।

দিনবদলের পালা শুরু হয়ে গিয়েছে.....শুধু নতুন সূর্য্য ও নতুন ভোরের অপেক্ষা ।।